Breaking News

ভালোবাসার_ডায়েরী

↓↓↓
শ্যামলাবতী একটা মেয়েকে বিয়ে করছি তার নাম ছিলো আদিবা।বউকে দেখলে মায়া লাগে বিশেষ করে চোখের মায়া খুব বেশি লাগে।বিয়ের সাতদিন পরে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যাই।সেখানে দুইদিন থাকার পরে আবার নিজের বাড়িতে আসি।বাড়িতে আসলে আদিবা আমাকে তার নিজের হাতে লেখা একটা ডায়েরী পড়তে দেয়। আদিবা নিজের জীবনের সব দুঃখ- কষ্টের কথা সে ডায়েরী'তে লিখে রাখছে।লিখে রাখছে ভবিষ্যৎ যে ছেলেটার সাথে তার বিয়ে হবে তার সাথে কেমন করে সংসার করবে।কেমন করে সংসারটা গুছিয়ে রাখবে ইত্যাদি…… ইত্যাদি……… সবকিছু এক্কেবারে গুছিয়ে লিখে রেখেছে ডায়েরি'তে। ডায়েরী'টা আমি তখন না পড়ে অালমারি'তে রেখে দিই।পাঁচ'মাস পরে অালমারি'থেকে নতুন শার্ট নিতে গিয়ে হঠাৎ ডায়েরী'টার প্রতিদৃষ্টি গেল। হাতে নিয়ে প্রথম পৃষ্ঠা পড়তে নজর গেলো আদিবা'র জন্ম তারিখ এর দিকে। আজ রাত ১২টার পরে আদিবা'র জন্মদিন। ডায়েরী'টা না পড়ে অপেক্ষায় অাছি কখন রাত ১২টা বাজবে আর কখন আদিবা'কে শুভেচ্ছা জানাবে।রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ছে। আমি না ঘুমিয়ে শুধু ঘড়ির কাটায় ১২টার অপেক্ষায় আছি। ১২টা যখন বাজে তখন জানালা খুলে দিই। জানালা খুলতে না খুলতে আদিবা'র মুখে চাঁদের আলো পড়ে। ইসসসস,কি সুন্দর যে লাগতেছে বউটাকে। তার উপরে আবার চাঁদের অালো মুখ খানা ঝলমল করতেছে আদিবা'র। আস্তে আস্তে কানের পাশে গিয়ে কানে কানে আমি বললাম ……………………,,,,,,,,,,,
:
:
- হ্যাপি বার্থডে টু ইউ আদিবা।
এভাবে আমি তিনবার বলার পরে আদিবা ঘুম থেকে উঠে বলে………
- তুমি কিভাবে জানলে যে,আজ আমার জন্মদিন?
- তোমার ভালোবাসার ডায়েরী'তে লেখা ছিলো।
- ও আচ্ছা,ধন্যবাদ,ভালবাসা অফুরন্ত স্বামী। আমাকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
- তোমার এ জন্মদিনে কি চাওয়ার আচগে আমার কাছ থেকে?
- কিছুই না,শুধু তুমি আমার হাত ধরে মৃত্যুর অাগ পর্যন্ত থাকলেইহবে। চলুন ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ি এ দিনে।
বউটার কথা শুনে আমি পুরাই হাবলু হয়ে গেছি। আদিবা আমাকে চুপচাপ দেখে বলে……………….,,,,,,,,.,,,,
- কি ব্যাপার কি ভাবছো?
- না, কিছুই না।
- তাহলে চলো স্রষ্টার উদ্দেশ্যে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিই, আমাদের এ সুখের সংসারে কোনদিন যেনো দুঃখ না আসে।
- হ্যাঁ চলো।
:
:
নফল নামাজ আদায় করে ঘুম গেলাম। ফজর বেলায় আবার নামাজ পড়ে ঘুমাতে যাবো তখন আদিবা বাজার করার জন্য লম্বা হাতে একটা লম্বা লিষ্ট ধরিয়ে দিয়ে বলে……………………,,,,,,
- যাও এগুলো কিনে নিয়ে আসো বাজার থেকে।
- কেন?এতো জিনিস দিয়ে কি করবে। তাছাড়া আজকে পরিবারের সবাই বাহিরে খাবো এবং বন্ধুরা মিলে ঘুরে-বেড়াবো,আজকে তোমার জন্মদিন বলে কথা।
- জানি, তবে এগুলো কিছুই করতে হবে না।তুমি বাজার থেকে এগুলো কিনে নিয়ে আসো আমি নিজের হাতে রান্না করে আজকে আমার মেহমানদের'কে খাওয়াবো।আমার জন্মদিনের উদ্দেশ্য।
:
:
বউটার কথা শুনে সত্যিই খুব মায়া লাগছে খুব ইচ্ছা করছিলো জড়িয়ে ধরতে।জড়িয়ে ধরে বলার খুব ইচ্ছা ছিলো…………………,,,,,,,,,,,,,,,,,,
- তোমাকে বিয়ে করে আমি খুব খুশি।তোমাকে পেয়ে আমার জীবন ধন্য,আমি শুকরিয়া আদায় স্রষ্টার কাছে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করে আমার জন্য পাঠিয়েছেন। তুমি আমার ঘরের এক টুকরা জান্নাত।তবে আদিবা' কে এইসব কিছুই বলি নাই।বাজারে গিয়ে সব জিনিস কিনে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে আসলাম। বউকে বাজারের সব কিছু দিয়ে দিলাম একটা লম্বা ঘুম।
:
:
আদিবা নিজের হাতে রান্না করে সব কিছু রেডি করছে।রান্না করতে করতে প্রায় দুপুর ১২টা বেজে গেলো।তাছাড়া আজ শুক্রবার পবিত্র জুম্মার দিন। মসজিদে মুয়াজ্জিনের কন্ঠে আযান শুনতে পেয়ে বউ আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিল। আমি তাড়াতাড়ি গোসল শেষে গ্রামের মসজিদে চলে গেলাম। মসজিদে জামাত শেষে বাড়িতে আসলাম। ঘড়িতে যখন দুপুর ২: ১৫ টা মিনিট বাজে তখন আমি আদিবা'কে বলি…………,,,,,,
- কোথায় তোমার মেহমান?
- তাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, কিছুক্ষণ পরে আসবে।
- কে দাওয়াত দিয়েছে?
- মা দিয়েছেন।
- কাকে দাওয়াত দিয়েছে?
- উফফ!এত কথা বলো কেন? দুপুর ২টা ৩০ মিনিট বাজলে দেখবে।
দুপুর যখন ২টা ৩৫ মিনিট বাজে বাড়ির উঠান থেকে দেখতেছি পাশের গ্রামের এতিমখানার ১৫ জন ছেলে পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে মাথা টুপি পড়ে আমাদের বাড়িতে আসতেছে।আমার বুঝতে আর দেরি হলো না আমার আদিবা'র মেহমান কারা? আদিবা নিজের হাতে সবার প্লেটে ভাত তুলে দেয়।বাচ্চা গুলো বিসমিল্লাহ বলে কি সুন্দর করে লোকমা করে করে খাচ্ছে।পাশ থেকে মা বলে…………………,,,,,,,,
- বউমা ঐ হুজুর'কে আরেকটু ভাত দাও।
বাচ্চাটা যখন হুজুর ডাকটা শুনলো তখন কি সুন্দর একটা মুচকি হাসি দিয়েছে যা কোটি টাকা সমান।সবাই খাওয়ার পর তুলে মোনাজাত করে আবার এতিমখানায় চলে যায়।
:
:
আদিবা সবকিছু শেষে আমাকে বলে……………………,,,,,,,
- অালহামদুলিল্লাহ সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে আর আমার মনের আশাও পূরণ হয়েছে। যা শুধু তোমার জন্য সফল হয়েছে।তোমাকে এত্তগুলি ভালোবাসা আর ধন্যবাদ দিলাম সব নিয়ে নাও।
- ধন্যবাদ আমাকে কেন?আমি' তো তোমাকে দিবো এমন একটা পার্টি দেওয়ার জন্য।যা হচ্ছে জীবনের স্মরণীয় পার্টি প্রতিবছর মনে থাকবে।
- ধন্যবাদ লাগবে না,ইনশাল্লাহ তুমি শুধু আমার পাশে থাকলেই হবে।কি থাকবে না?
- হ্যাঁ অব্যশই।তোমাকে ছাড়া' তো এখন থেকে আমার নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হবে।
- আচ্ছা ঠিক আছে, এখন খেতে এসো। আজ আমার জন্মদিন তুমি নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিবে।কি দিবে না?
- হ্যাঁ অবশ্যই খাইয়ে দিবো।
- তাহলে চলো।
..........
সমাপ্ত 👍👍

No comments