হাউজ ওয়াইফ
↓↓↓
"তা ভাবী কি কাজ করেন আপনি?"
"এই তো ঘরের কাজে ই ব্যস্ত সারাদিন।"
"ও তার মানে আপনি হাউজ ওয়াইফ!!! "
আসিফ এর এই কথায় আমার ভেতরে কোথায় যেন প্রবল একটা আন্দোলন ঘটে গেলো।
আমি আসিফ কে কিছু বললাম না।
রাতে আমার স্বামী শাহিন আসলে ওকে বললাম,
" তোমার কলিগ আসিফ আমাকে হাউজ ওয়াইফ বলে টিটকারি করেছে।"
উচ্চস্বরে হেসে উঠলো শাহিন।
" তুমি তো হাউজ ওয়াইফ ই। কাজ টাজ করো না। এতে টিটকারি কই করলো? তুমি সব কিছুতেই দোষ একটু বেশি ধরো। মেয়ে মানুষ সারা দিন ঘরে বসে বসে কুটনামি শেখা ছাড়া ত আর কিছু শেখ না।"
আমার মুখ দিয়ে আর কিছুই বের হলো না।
মনে হলো কেউ আমাকে পাথর ছুঁড়ে মাথায় তীব্র একটা আঘাত করে চলে গেলো।
আমার রক্ত ঝরছে কিন্তু তা কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
সেদিন ঘুমাতে পারলাম না। সারা দিন এত পরিশ্রম করে ও শেষ মেষ এই অর্জন আমার!
নুন্যতম সম্মান টুকু ও নেই।
সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম ভাংলো শাহিনের।
ঘুম ভাংতেই বাড়ি মাথায় উঠালো সে।
অফিসের সময় হয়ে গেলো আমি এখনো নাস্তা না
বানিয়ে শুয়ে আছি।
শাহিন ফ্রেশ হয়ে এলো। দেখলো আমি তখনো বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে আছি।
" তুমি কি চাও আমি না খেয়ে অফিসে যাই।"
" দেখো আমি ত কাজ টাজ করি না। তাই একটু মনমত ঘুমাতে তো সমস্যা নেই। তুমি কাজ করো ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি অফিসে যাও। ক্ষিধা লাগলে তোমার অফিসের ক্যান্টিন তো আছেই।"
" আমার জামা কাপড় গুলো আয়রন করো নি কেনো? এখন আমি কি পরে যাবো?"
" দেখ এসব তোমার কাজ আমি কেন করতে যাব? এতদিন করে ও যখন তোমার কাছে কোনো গুরুত্ব পাই নি তো এখন তোমার কাজ তুমি নিজে ই করো।"
শাহিন নাস্তা না করে দুপুরের খাবার না নিয়েই আয়রন বিহীন জামা পরে অফিসে চলে গেলো।
আমি সারা দিন ঘুমালাম। পুরোনো অ্যালবাম খুলে দেখে সময় কাটালাম।
নিজের শাড়ি গুলো কে গোছালাম। আয়রন করলাম। সংসার এর কাজের চাপে নিজের জিনিসগুলো কে সময় ই দেয়া হয় না।
ঘর নোংরা হয়ে পড়ে রইলো। রান্নাঘরে রান্না হলো না। বাথরুমে শাহিনের নোংরা জামা কাপড় পড়ে আছে।
আজ হাউজ ওয়াইফ তকমা পাওয়া আমি হাউজের কোনো কাজ ই করলাম না।
তাহলে আজ আমার পরিচয় কি? আজ তো আমি হাউজ ওয়াইফ নই।
রাতে শাহিন এলো। ঘরের অবস্থা দেখলো সে।
আজ তার অফিস থেকে ফেরার সাথে সাথে চা নাস্তা হাতে এলো না।
রাতে রান্না হলো না। না খেয়েই দুজন শুয়ে পড়লাম। কোনো কথা ই হলো না আমাদের মাঝে।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি শাহিন নেই পাশে।
আজ অবশ্য শুক্রবার। শাহিনের তো অফিস ছুটি। কই গেলো? ও তো বেলা করে ঘুম থেকে উঠে এই দিনে।
রান্নাঘর থেকে শব্দ শুনে এগিয়ে যেতে ই দেখি শাহিন।
আমাকে দেখে ই বললো,
" আজ তোমার ছুটি। আজ তোমার সব কাজ আমি করবো। অবশ্য তুমি চাইলে একটু হেল্প করতে পারো।"
আমার চোখে পানি চলে এলো।
শাহিন কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
" পাগলি তুমি রাগ করেছো বেশ করেছো। তুমি না রাগলে আমি তো ধরতে ই পারতাম না আমি কতটা অবিচার করছি তোমার প্রতি। তুমি সারা দিন কত কষ্ট করে আমাদের সংসার টা আগলিয়ে রাখো আর আমি তার গুরুত্ব ও দেই নি এত দিন। এবার থেকে টিটকারি করে নয় সম্মানের সাথে তোমার পদবী হবে হাউজ ওয়াইফ।
শুধু তাই নয় তুমি কত বেতন নিবে জানিয়ে দিও।
আর সপ্তাহে একদিন তোমার ছুটি। সেদিন আমি সব করবো। সেদিন আমার পদবী হবে হাউজ হাজব্যান্ড।"
আমার মন থেকে সব রাগ গুলো উবে গেলো।
সেখানে ভর করলো অদ্ভুত এক ভালোলাগা।
সেই ভালোলাগা হাউজ ওয়াইফ হয়ে সম্মান পাওয়ার আনন্দে।
হাউজ ওয়াইফ আমার পদবী।
সম্মানজনক এক পদবী।
✌✌✌
"তা ভাবী কি কাজ করেন আপনি?"
"এই তো ঘরের কাজে ই ব্যস্ত সারাদিন।"
"ও তার মানে আপনি হাউজ ওয়াইফ!!! "
আসিফ এর এই কথায় আমার ভেতরে কোথায় যেন প্রবল একটা আন্দোলন ঘটে গেলো।
আমি আসিফ কে কিছু বললাম না।
রাতে আমার স্বামী শাহিন আসলে ওকে বললাম,
" তোমার কলিগ আসিফ আমাকে হাউজ ওয়াইফ বলে টিটকারি করেছে।"
উচ্চস্বরে হেসে উঠলো শাহিন।
" তুমি তো হাউজ ওয়াইফ ই। কাজ টাজ করো না। এতে টিটকারি কই করলো? তুমি সব কিছুতেই দোষ একটু বেশি ধরো। মেয়ে মানুষ সারা দিন ঘরে বসে বসে কুটনামি শেখা ছাড়া ত আর কিছু শেখ না।"
আমার মুখ দিয়ে আর কিছুই বের হলো না।
মনে হলো কেউ আমাকে পাথর ছুঁড়ে মাথায় তীব্র একটা আঘাত করে চলে গেলো।
আমার রক্ত ঝরছে কিন্তু তা কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
সেদিন ঘুমাতে পারলাম না। সারা দিন এত পরিশ্রম করে ও শেষ মেষ এই অর্জন আমার!
নুন্যতম সম্মান টুকু ও নেই।
সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম ভাংলো শাহিনের।
ঘুম ভাংতেই বাড়ি মাথায় উঠালো সে।
অফিসের সময় হয়ে গেলো আমি এখনো নাস্তা না
বানিয়ে শুয়ে আছি।
শাহিন ফ্রেশ হয়ে এলো। দেখলো আমি তখনো বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে আছি।
" তুমি কি চাও আমি না খেয়ে অফিসে যাই।"
" দেখো আমি ত কাজ টাজ করি না। তাই একটু মনমত ঘুমাতে তো সমস্যা নেই। তুমি কাজ করো ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি অফিসে যাও। ক্ষিধা লাগলে তোমার অফিসের ক্যান্টিন তো আছেই।"
" আমার জামা কাপড় গুলো আয়রন করো নি কেনো? এখন আমি কি পরে যাবো?"
" দেখ এসব তোমার কাজ আমি কেন করতে যাব? এতদিন করে ও যখন তোমার কাছে কোনো গুরুত্ব পাই নি তো এখন তোমার কাজ তুমি নিজে ই করো।"
শাহিন নাস্তা না করে দুপুরের খাবার না নিয়েই আয়রন বিহীন জামা পরে অফিসে চলে গেলো।
আমি সারা দিন ঘুমালাম। পুরোনো অ্যালবাম খুলে দেখে সময় কাটালাম।
নিজের শাড়ি গুলো কে গোছালাম। আয়রন করলাম। সংসার এর কাজের চাপে নিজের জিনিসগুলো কে সময় ই দেয়া হয় না।
ঘর নোংরা হয়ে পড়ে রইলো। রান্নাঘরে রান্না হলো না। বাথরুমে শাহিনের নোংরা জামা কাপড় পড়ে আছে।
আজ হাউজ ওয়াইফ তকমা পাওয়া আমি হাউজের কোনো কাজ ই করলাম না।
তাহলে আজ আমার পরিচয় কি? আজ তো আমি হাউজ ওয়াইফ নই।
রাতে শাহিন এলো। ঘরের অবস্থা দেখলো সে।
আজ তার অফিস থেকে ফেরার সাথে সাথে চা নাস্তা হাতে এলো না।
রাতে রান্না হলো না। না খেয়েই দুজন শুয়ে পড়লাম। কোনো কথা ই হলো না আমাদের মাঝে।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি শাহিন নেই পাশে।
আজ অবশ্য শুক্রবার। শাহিনের তো অফিস ছুটি। কই গেলো? ও তো বেলা করে ঘুম থেকে উঠে এই দিনে।
রান্নাঘর থেকে শব্দ শুনে এগিয়ে যেতে ই দেখি শাহিন।
আমাকে দেখে ই বললো,
" আজ তোমার ছুটি। আজ তোমার সব কাজ আমি করবো। অবশ্য তুমি চাইলে একটু হেল্প করতে পারো।"
আমার চোখে পানি চলে এলো।
শাহিন কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
" পাগলি তুমি রাগ করেছো বেশ করেছো। তুমি না রাগলে আমি তো ধরতে ই পারতাম না আমি কতটা অবিচার করছি তোমার প্রতি। তুমি সারা দিন কত কষ্ট করে আমাদের সংসার টা আগলিয়ে রাখো আর আমি তার গুরুত্ব ও দেই নি এত দিন। এবার থেকে টিটকারি করে নয় সম্মানের সাথে তোমার পদবী হবে হাউজ ওয়াইফ।
শুধু তাই নয় তুমি কত বেতন নিবে জানিয়ে দিও।
আর সপ্তাহে একদিন তোমার ছুটি। সেদিন আমি সব করবো। সেদিন আমার পদবী হবে হাউজ হাজব্যান্ড।"
আমার মন থেকে সব রাগ গুলো উবে গেলো।
সেখানে ভর করলো অদ্ভুত এক ভালোলাগা।
সেই ভালোলাগা হাউজ ওয়াইফ হয়ে সম্মান পাওয়ার আনন্দে।
হাউজ ওয়াইফ আমার পদবী।
সম্মানজনক এক পদবী।
✌✌✌
No comments