Breaking News

কবি! কবি! ভাব 😛😛

↓↓↓
দীর্ঘ দিন পর আবার মেসে ফেরা... দরজা খুলেই দেখি সামনে বিশাল এক মাকড়শারজাল । মাকড়শা টা স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে... রুমের অবস্থা নাজেহাল। দরজায় দাঁড়িয়ে দেখছি মাকড়শা টাকে। ওর তাকানোর ভাব ভংগি অতি সরল। ওর সাথে কথা বলতে পারলে হয়তো এমন হতো-
-স্লামিকুম স্যার, কখন এলেন? 
-এইতো, এখনি। রুমের এ অবস্থা কেন? এত জায়গা থাকতে দরজার সাম্নেই বা এত বড় জাল বানালি কেন? 
- একচুয়েলি স্যার, অনেক দিন পর এলেন। এই সময়ে আপনি আমার কাছে অতিথির সমতুল্য। তাই স্যার আপনাকে স্বাগতম জানাতে এই ক্ষুদ্র আয়োজোন।
-আয়োজন মানে? 
- হে হে। স্যার, ব্যাপার টা আসলে নতুন কোন মূল্যবান অতিথি আসলে মানুষ যেমন তাকে দিয়ে ফিতা কাটিয়ে স্বাগতম জানায় ঠিক সেরকম। আমি তো আর ফিতা যোগাড় করতে পারি নি, তাই জাল বানিয়ে রেখেছি স্যার। আপনি এটা কেটে আপনার বেডের দিকে এগুবেন।
- অহ, তা বুঝলাম। কিন্তু ফ্যানের সাথে যে দুটো বাসা বানিয়েছিস? ওসোব কি জন্য? - স্যার হয়েছে কি... নীচতলার আমার দুটো জাস্ট ফ্রেন্ড কে এনে রেখেছি গেস্ট হিসেবে। আপনি নেই তো .. বড্ড একা লাগছিলো স্যার। তাই আর কি...
- কোথায় ওরা? দেখছি না যে? 
- আপনার দরজা খোলার শব্দ পেয়ে ভয়ে ওরা আপনার বেডের বা'দিকটায় লুকিয়েছে। ডাকব স্যার ওদের? আপনাকে দেখলে বড্ড খুশি হবে। এম্নিতেই ওরা দুজন আপনার প্রসংসায় পঞ্চমুখ.. 
- কেন? 
- যাওয়ার আগের রাতে আপনি কিছু মশা মেরে ফেলে রেখে গিয়েছিলেন না স্যার? ওসোব খেয়েই ওরা এতদিন কাটিয়েছে। বলেছে তোর স্যার খুব ভালো মানুষ। তোর খাবার দাবারে প্রতি যত্নশীল।
ডেকে দিই স্যার ওদের? 
- উহু। থাকুক।কিন্তু.......
- ঘর পরিষ্কারের কথা ভাবছেন স্যার? ওসব নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। কলিমের মা কে বলে দিলেই বিষয় টা সে দেখবে।
এম্নিতেই সে আপনাকে খুজছে দাওয়াত খাওয়ানোর জন্য...। কাল ও এসে দরজার ওপাশ থেকে আপনাকে ডেকে গেছ।
দাওয়াতের কথা টা তখনই শুনেছি স্যার।
- দাওয়াত কেন? 
- আপনি নাকি তাকে বলেছিলেন তার বড় মেয়ের বিয়ে যার সাথে হবে সে দুটো অটো রিক্সার মালিক?
- হ্যা, তো? 
- গত সপ্তাহেই তার বড় মেয়ের বিয়ে শেষ হয়েছে শুনলাম। পাশের রুমের ভাইকে বললো...। কিন্তু আশ্চর্য ঘটনা কি জানেন স্যার? 
- কি? 
- মেয়ের জামাইয়ের ২টা অটো রিক্সা আছে এই শহরে। কলিমের মার ধারনা আপনি কামেল মানুষ। তাই দাওয়াত খাওয়াবেন আপনাকে।
-আমার তোষকের উপর ওসোব কি? 
- এ ব্যাপারে আমি অত্যন্ত লজ্জিত, স্যার। কাজ গুলো ঐ নচ্ছর পাজি তেলাপোকা টার। আপনি যাকে আপনার এডিডাস জুতোর ভেতর আশ্রয় দিয়েছেন। 
জানেন স্যার? প্রচুর উৎপাত করেছে এত দিন। ওকে অনেক বুঝিয়ে বলেছি " এসব দেখলে কিন্তু স্যার রেগে যাবেন "।
এটা বলায় ও ফুড়ুৎ করে এসে আমার জাল টা ফুটো করে দিয়েছে স্যার। আর বলেছে স্যার-ট্যার কেউ নেই। আজ থেকে আমিই তোর স্যার। আমাকে স্যার বলে ডাকবি। 
আমি খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম স্যার। বাধ্য হয়ে ওকে এ ক দিন স্যার বলে ডাকতে হয়েছে । স্যার।
-তাহলে কিইইই...
- জ্বী স্যার, আপনি এতদিন এই বেয়াদব কেই দামী জুতোয় পুষেছেন স্যার।দেখছেন না স্যার আপনার তোষকে হেগে মুতে কি বেহাল অবস্থা করে রেখেছে? 
ওকে বিদেয় করে দিন স্যার।
-হ্যা, বিদেয় করতে হবে ওকে।
- আহা , সুন্দর ডিসিশন নিয়েছেন স্যার। 
স্যার, আপনি বেশ ক্লান্ত, ফ্রেশ হয়ে নিন। কলিমের মা মনে হয় এসে পড়বে ততক্ষনে । 
-হ্যা, ফ্রেশ হয়ে আসি তাহলে কি বলিস? 
- হ্যা স্যার, ইয়ে, মানে, স্যারররর....
- কিছু বলার থাকলে বলে ফেল।
- বলছি কি স্যার? আমি কি আগের জায়গা, মানে আপনার লেদার ব্যাগের পেছনেই থাকব? 
- হ্যা, কেন? কোন সমস্যা? 
- মানে স্যার, ওখানে আলো বাতাসের খুব অভাব স্যার। বিষয় টা যদি একটু দেখতেন? 
- আগে তেলাপোকা টা বিদেয় করি। পরে তোর বিষয় টা দেখব.. । তুই উপরের পশ্চিমের কোনায় থাকবি । 
- থ্যাংকয়্যু স্যার, থ্যাংকস্ আ লট স্যার। 
- হুম..
অতঃপর ফ্রেশ হয়ে বড় মাকড়সা জাল কেটে রুমের ভেতর ঢুকলাম। কলিমের মা এসেছে।ধুলো ময়লার মাঝে তেলাপোকা টা চিত হয়ে শুয়ে আছে আছে।

👍👍👍👍

No comments