Breaking News

সত্যিকারের ভালোবাসাগুলো যেন এমন হয়

↓↓↓
এই ঘুমিয়েছো?
"
রাতে খেয়ে একটু শুয়েছিলাম।একটু ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম।তখনি অবন্তীকা আমার হাতে হাত রেখে ডাকলো।অবন্তীকার ডাকে আমি ওর দিকে ঘুরে তাকালাম।লাইটের আলোতে অবন্তীকার মুখের বিষণ্ণ ভাবটা আমার চোখ এড়ালো না।
আমি অবন্তীকার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-না ঘুমাইনি,কিছু বলবে?
-আম্মুর শরীরটা ভাল না।একটু দেখতে গেলে ভাল হতো না।
-যাবে।সমস্যা কি।
-আমি চাচ্ছিলাম কিছুদিন থাকতে।
-হুম থাকবা।আম্মু অসুস্থ, ওনার পাশে থাকলে ওনার ভালই লাগবে।কবে যাবা বলো,আমি রেখে আসবো।
আমার কথায় অবনের মুখটা কেমন যেন মলিন হয়ে গেলো।অবন্তীকাকে ভালবেসে অবন বলেই ডাকি।মাঝে মাঝে অবন্তীও বলি।অবন মলিন মুখে বললো,
-তোমাকে ছাড়া আমি কোন দিন থেকেছি।
-আমার কোন সমস্যা হবে না,তুমি যাও,আমিও যাব একদিন।
-তোমার তো কোন সমস্যা নেই,সমস্যা তো আমার। তোমাকে ছাড়া থাকতে পারিনা।
অবন্তীকার কথায় আমি কিছু বললাম না।মেয়েটা আমাকে আমার থেকেও বেশী ভালবাসে।
"
বিয়ের প্রায় দু মাস পরের ঘটনা।
অবনের বোনের বাসায় দাওয়াত ছিল।আসলে কিছুদিন থাকতে হবে।এদিকে অফিসের চাপে যেতেও পারছিলাম না।তবুও অবন্তীকাকে ওর বোনের বাসায় রেখে আমি অফিসে গিয়েছিলাম।
অফিসে আসতেই অবন্তীকার ফোন এসে হাজির।মাত্রই তো রেখে আসলাম আবার কি হলো।আমি ফোনটা ধরতেই অবন্তীকা বললো,
-কখন আসবা।
-মাত্রই তো অফিসে আসলাম।দেখি কি করা যায়।
-আচ্ছা,আসবা কিন্তু।
ফোনটা রেখে কাজে মনোযোগ দিলাম।সারাদিন প্রায় পনেরো বার ফোন দিল মেয়েটা।বিকেলের দিকে আবার ফোন দিতেই আমি ধরে বললাম,
-আজ যেতে পারছি না,তুমি আজকে থাকো আমি বরং কালকে যাব।
আমার কথায় অবন কিছু না বলেই কেটে দিল।মেয়েটা হয়তো বেশ রেগে গেছে।যাই বাসায় গিয়ে আবার ফোন দিলে ঠিক হয়ে যাবে।আমি অফিস থেকে বের হয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।মেয়েটার রাগ ভাঙাবো কিভাবে সেটা ভাবতে ভাবতেই বাসায় পৌছে গেলাম।
.
পকেট থেকে চাবিটা বের করতে উপরে উঠতেই দেখি দড়জার সামনে অবন্তীকা দাঁড়িয়ে।এসব ওকে এখানে দেখে আমি বেশ অবাক হলাম।ও এখানে কিভাবে।আমি ওর কাছে যেতেই অবন্তী বললো,
-তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারবো না।কাল বরং তোমাকে সাথে নিয়েই যাব।
অবন্তীকার কথায় আমি কিছু বললাম না।মুচকি হেসে জড়িয়ে ধরলাম।মেয়েটা বেশ সরল সোজা।মনটাও বেশ ভাল।আমাকে একটু বেশীই ভালবাসে।
"
আমি অবন্তীকার দিকে তাকিয়ে বললাম,
-মাত্রই তোমাকে নিয়ে কক্সবাজার ছুটি কাটিয়ে আসলাম, এখন কি আর ছুটি নেওয়া যাবে।
আমার কথায় অবন্তীকার মুখটা আরও একটু মলিন হয়ে গেলো।ওর মন খারাপ দেখে আমার মনটাও খারাপ হয়ে গেলো।আমি অবন্তীকাকে বললাম,
-যেতে পারি,দু দিন পর, সেটাও শুধু একদিনের জন্যে।
আমার কথায় অবন্তীকার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।মিষ্টি হেসে বললো,
-একদিন হলেও আমি তোমার সাথেই যাব।তুমি সত্যি ই যাবে।
-হ্যা যাব।এবার আসো ঘুমাবো।
আমার কথায় মেয়েটা আমার বুকে মাথা রাখলো।লক্ষী বউটা আমার।আমাকে একটু বেশীই ভালবাসে।
"
এইতো কিছুদিন আগের কথা।অফিসের কাজে যেদিন চট্টগ্রাম যাব সেদিন অবন্তীকার মুখের মলিন ভাব দেখে আমার মনটাও খারাপ হয়ে গেলো।আমি ওর গালে হাত রেখে বললাম,
-যাবে আমার সাথে?
-ওয়েট,দাড়াও।
দুইমিনিট পর দেখি মেয়েটা ব্যাগ গুছিয়ে একদম তৈরি হয়ে এসেছে।সেদিন পাগলী মেয়েটাকে নিয়েই গিয়েছিলাম।
"
আজ অবন্তীকা বেশ খুশি।আজ ওদের বাসায় যাচ্ছি।সেটাও একদিনের জন্যে।তবুও মেয়েটা খুশি।আমার সাথে যাবে।
'
আমাদের দেখে অবন্তীকার মা মানে আমার শ্বাশুড়ি আম্মা বেশ খুশিই হয়েছেন।অসুস্থ শরীর নিয়েই বেশ উঠে দাড়িয়েছেন।আমি ওনার দিকে এগিয়ে গিয়ে সালাম দিয়ে আবার শুয়িয়ে দিলাম।
আসলে মেয়েকে কাছে পেলে অসুস্থ মা এমনিতেই অনেকটাই সুস্থ হয়ে যায়।আসলে মনের শক্তি পায়।
এতদিন পর মা কে কাছে পেয়ে অবন্তী প্রায় আমাকে ভুলেই গেছে।সবসময় মায়ের সেবা করেই যাচ্ছে।মেয়ে বলে কিথা।
"
আমিও যাব।
'
সন্ধার দিকে যখনি একটু বের হতে যাব তখনি অবন কথাটি বললো।আসলে সারাদিন বাসায় থাকতে থাকতে কেমন যেন বোর হয়ে যাচ্ছিলাম।তাই একটু বের হতে চেয়েছিলাম।চা ও খাওয়া যাবে,সাথে মাংসের চপও।
কিন্তু বিপত্তি বাধলো অবন্তীকাকে নিয়ে।আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-তুমি কোথায় যাবে?
-তোমার সাথে।
-আমার সাথে মানে।একটু বাইরে যাচ্ছি, এখনি চলে আসবো।
-না,যদি আর না আসো।
অবন্তীকার কথায় আমি হাসবো না মন খারাপ করবো বুঝলাম না।বলে কি মেয়েটা।আমি নাকি ওকে রেখে চলে যাব।আমি অবনের গালে হাত রেখে বললাম,
-চা খেতে যাচ্ছি।এখনি আসবো।
-আমি চা বানিয়ে দেই।
-তাহলে মাংসের চপ কোই পাব?
-মাংসের চপ খেলে তোমার গ্যাস হয়,আসো আমার সাথে।
কথাটি বলেই অবন্তীকা আমাকে টেনে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বললো,
-বসো, আমি নিয়ে আসছি।
অবন্তীকার কথায় আমি আর কিছু বললাম না।মেয়েটা এত বোকা কেন।
অবশ্য মেয়েটা দারওয়ান চাচাকে দিয়ে মাংসের চপ আনিয়েছিল।কিন্তু  আমাকে দিয়েছে মাত্র একটা।আরে বাবা গ্যাস হলে ওষুধ তো আছেই।তাই বলে কি খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে।
"
শ্বশুর বাড়িতে এই একদিনের ছুটিটা ভালই কাটলো।তবে সকাল থেকেই অবন্তীকার মুখটা সেই আগের মতই মলিন হয়ে গেলো।হয়তো অসুস্থ মা কে রেখে যেতে ইচ্ছে করছে না।এদিকে আমাকেও কিছু বলতে পারছে না।
কিন্তু মেয়েটা কোই গেলো।আমি অবন্তীকার রুমের দিকে এগুতেই দেখি মেয়েটা ব্যাগ গুছাচ্ছে।আমি অবনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
-মন খারাপ?
-কোই না তো।
-থাকবে আর কিছুদিন?
-তোমার তো ছুটি নেই।
-তুমি বরং থেকে যাও,আমি কিছুদিন পর এসে নিয়ে যাব।
-লাগবে না।আজকেই যাব। 
আমি এবার অবন্তীকাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে ওর কাধে হাত রেখে বললাম,
-তোমার মলিন মুখ দেখতে আমার কখনই ভাল লাগে না।তাই অফিস থেকে আরও দু দিনের ছুটি নিয়েছি।
আমার কথায় অবনের মলিন মুখে হাসি ফুটে উঠলো।খুশিতে মেয়েটা প্রায় কেদে দিল।আমি অবনের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম,
-কাদলে কিন্তু এখনই চলে যাব।
আমার কথায় অবন কিছু বললো না।আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়িত কণ্ঠে বললো,
-ভালবাসি তোমাকে,অনেক ভালবাসি।
-আমি ও ভালবাসি আমার একমাত্র সুইট কিউট লক্ষী বউটাকে।
আমার কথায় অবন্তীকা আমার কপালে একটা চুমু একে দিল।ভালবাসার চুমু।

ধন্যবাদ পড়ার জন্য..... 👍👍👍

1 comment: