Breaking News

শুভ জন্মদিন

↓↓↓
ফোনটা রিসিভ করতেই,অপর প্রান্ত থেকেঃ- 
মাইশাঃ ঘুম কি হয়েছে তোমার?নাকি আরেকটু ঘুমাবা?
আমিঃ না,এইতো উঠলাম
মাইশাঃ না চাইলে আরেকটু ঘুমাতে পারো,মাত্রতো ১০ টা ২৫ বাজে,আমি যেখানে দাঁড়ানোর কথা সেখানে দাঁড়িয়ে আছি ।। 
এবার আমি বুঝতে পারলাম ব্যাপারখানা,ভোর ছয়টায়, কাকরাইল ফুটওভারব্রীজের উপর ওর সাথে আমার দেখা করে আমার জন্মদিন উপলক্ষে ছয়টা টু সন্ধা ছয়টা ওর সাথে ঘুরার কথা বাট আমি সাড়ে ৪ ঘন্টা লেইট। বুঝতেছি আজ কপালে শনি আছে,ফোনে দেখি মাত্র ৮৭ তম কলে আমি ফোন ধরেছি...
তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমের কাজ সেরে বের হবো এমন সময় আবার ফোন...
বাসা থেকে বের হইছো?
হুম,বের হইছি...
বাসার সামনে গিয়েই দেখি এক রিক্সাওয়ালা বললো "ভাই,তাড়াতাড়ি ওঠেন,আপামণি আজকে দারুণ ক্ষেপবে"
রিক্সায় উঠতে উঠতেই,রিক্সাওয়ালা বললো "ভাই হেই ছয়টা থেকে আপনের বাসার নিচে দাঁড়াই আছি,এতোক্ষন কী করছেন?
আমিঃ আপনেরে কে পাঠাইছে, আর আমি কি করছি এটা দিয়া আপনি কী করবেন?
আমারে পাঠাইছে কাকরাইল যে বইয়া আছে হেই আপা,আপনার ফটো মোবাইলে দেখাইছে আর বাসার ঠিকানা দিয়া কইছে আপনারে লইয়া যাইতে।আপনি কি এতোক্ষন গরুর মতো ঘুমাইছেন ভাই?
আপনারে বলছে কে যত্তোসব ওলটা পালটা কথা, তাড়াতাড়ি টানেন তো...
ভাই ছেইতেন না। আজকা না আপনার হাপ্পি বাডডে, বাডডের দিন ছেইতে হয় না ;/ 
আমি চুপ করে রইলাম।
রিক্সা কাকরাইলের কাছাকাছি,আমি দূর থেকে ফুটওভারব্রীজের উপর তার মুখখানি দেখতে পাইতেছি।দ্রুত রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিতে যাবো দেখি রিক্সাওয়ালা বলে ভাড়া আপায় দিয়া দিছে।যাক আমি কথা না বাড়িয়ে ব্রীজে ওঠে গেলাম।দেখী তার মুখে দুলার স্তর পরে গেছে, তবে কোন রাগ অভিমান না দেখিয়ে হাসি হাসি মুখে বললো....
হ্যাপি বার্থডে আর একটু সামনে এগিয়ে আমাকে হালকা জড়িয়ে ধরে প্রায় কাঁদো কাঁদো গলায় বললো আজকের এ দিনের পাঁচটি ঘন্টা তুমি ঘুমিয়ে না কাটালেও পারতে।হঠাৎ আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে হাতে থাকা গোলাপ আমাকে দিয়ে বললো,এ গোলাপের পাপড়ির ন্যায় কোমল হোক তোমার সারাজীবন এ প্রার্থনা আমার।
আমার ধন্যবাদ দেয়া ঠিক হবে কিনা এ ভাবতে ভাবতেই,ও বললো "তোমার জন্য আমার একটা ক্ষুদ্র আয়োজন আছে" এ বলে ও একটা তালি দিলো আর নিচের থেকে কিছু ছেলে উপরে উঠে এলো,তাদের সবার পড়নে "শুভ জন্মদিন" লেখা টিশার্ট আর হাতে একটা কেকের প্যাকেট।
বাচ্চাদের থেকে কেকের প্যাকেট টা নিয়ে কেকটা ওর হাতের উপর রেখেই ছুড়িটা আমার হাতে দিয়ে বললো কাটো.....
আমি বিষ্ময় নিয়ে কেক কাটতে লাগলাম আর "ও" সহ সকল বাচ্চারা বলে উঠলো শুভ জন্মদিন তোমার।
কাটা কেকের পিসটা আমার মুখে দিতে দিতেই বললো এমনি ভাবে একশো বছর যেন তোমায় কেক খাওয়াতে পারি সেই দোয়া করো...
ওকে কেক খাওয়ানোর পর পুরো কেকটা ও বাচ্চাদের দিয়ে বললো,"তোরা কেকটা খেয়ে যে যার মতো বাসায় চলে যাইছ" আর সাথে সাথে বাচ্চারা কেক নিয়ে নিচের দিকে দিলো দৌড়।এমন সময় "ও" আমাকে বললো এরা পথশিশু, তোমার জন্মদিনে ওদের একটু ভালো রাখার চেষ্টা করলাম
কি বলবো বুঝতেছিনা,শুধু মনে হলো মাইশা তুমি পারো আর তুমিই শুধু পারবে সারাজীবন এমনে আমাকে ভালোবাসতে...
ও বললো,চলো টিএসসির দিকে যাবো ওইখানে আমার সব বান্ধবীদের আসতে বলেছি তোমার জন্মদিন উপলক্ষে,ওদের তুমি খাওয়াবে...
আমি বললাম,আমার কাছে তো টাকা নাই, মাইশা বললো জানি তারপরও তুমি খাওয়াবে। আমিও বুঝলাম টাকা না থাকলেও আমিই খাওয়াবো আর সব সময় এই হয়,আমার কাছে টাকা থাকে না তারপরও আমিই খাওয়াই।এ এক বিরাট রহস্য।আমি মানিব্যাগ ইউস করি না তারপরও মাইশা তার বান্ধবীদের বলবে আমার মানিব্যাগ নাকি তার কাছে...........

ধন্যবাদ...... ☺☺☺

No comments