First Time
Today is very special.Read it and feel something.
written by me.....
↓↓↓
প্রথমবার যাচ্ছি গার্লফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে।
সাবা'কে আমার গার্লফ্রেন্ড বলা যাবে কিনা জানিনা। ফেসবুকে আমাদের পরিচয়, মেসেঞ্জারে ভাবের আদান প্রদান। ফোন কল এ নিয়মিত খোঁজখবর ও ভিডিও কল এ শাসানো পর্যন্ত আমাদের সম্পর্ক। অনলাইন, ভার্চুয়াল বা বেতার এর দোহায় দিয়ে অনেকেই আমাদের সম্পর্কটাকে গুরুত্বের সাথে নেয়না। কিন্তু আমার বড়বোন (রুবী আপা) জানে আমার জীবনে সাবা'র গুরুত্ব কতটুকু।
বিগত তিনমাস যাবত আমার পরিবর্তনে বাসার সবাই অবাক। এখন আমি ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠি, আমার রুমে এখন আমার বন্ধুরা আসেনা, রাত ব্যাপি পার্টি হয়না, এলকোহলের গন্ধ বা নিকোটিনের ধোঁয়া পাওয়া যায়না।
বাসায় কারো সাথে উচ্চস্বরে কথা বলিনা, তিনবেলা'ই বাসায় খাই, খেয়ে আম্মুকে বলি 'তরকারিটা দারুণ রেঁধেছো আম্মু', আম্মু অবাক হয়ে চেয়ে থাকে আমার দিকে। একদিন তো খুশিতে আম্মু কেঁদেই ফেলেছিলো। আব্বুর সাথে যদিও এখনো কথা বলিনা তবে 'মিল' এ যাই ও বসে দেখাশোনা করি, আব্বু এতটুকুতেই খুশি।
সাবা'র কথা বাসায় শুধু রুবী আপা'ই জানতো, সাবার সাথে কথাও বলেছে রুবী আপা। এতদিন সব গোপন রাখলেও গতরাতে খাবার টেবিলে ভর মজলিশে সব ফাঁশ করে দেয় আপা। আব্বা শুনে উনার অভ্যেস অনুযায়ী রেগেমেগে একাকার,,, "চিনেনা-জানেনা-দেখেনি কখনো এমন মেয়ের সাথে প্রেম করে ডুবে মরছে, গাধা কোথাকার!"
আব্বা সহ বাসার সবার ফায়সালা, আগামীকাল রুবী আপাকে সাথে নিয়ে মেয়ের বাসায় যেতে হবে ও মেয়েকে তার পরিবার সহ আমাদের বাসায় দাওয়াত করে আসতে হবে। বাদবাকি পরে দেখা যাবে।
আমি রুবী আপাকে নিয়ে রওনা হলাম।
সাবাদের শহরে এসে হঠাৎ মনে হলো 'খালি হাতে যাওয়া ঠিক হবেনা,কিছু নেয়া দরকার।' রুবী আপা বললো "মিঠাইয়ের শোরুমে ঢুক, পাঁচ-সাত প্রজাতের মিষ্টি নিয়ে নে। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইট করতে বলে আমি গাড়ি থেকে নামলাম মিষ্টি কেনার উদ্দেশ্যে।
চোখ পড়লো রাস্তার পাশে একটা ঝুড়িতে দশ বারো পিস পেয়ারা নিয়ে বসে থাকা এক বৃদ্ধের দিকে। অস্বাভাবিক শীর্ণকায় ও বিধ্বস্ত চেহারা। এ বয়সে ও এই শারীরিক অবস্থায় কোনোক্রমেই এমন একজন মানুষ রাস্তায় পেয়ারা নিয়ে বসার কথা না। আরেকটা কথা হলো এই অফ সিজনে উনি পেয়ারা পেলেন কই?
কাছে গিয়ে জানতে পারি পেয়ারা গুলো উনার স্ত্রীর হাতে লাগানো বার্মিজ চাড়া গাছের, বারোমাস পেয়ারা ধরে। উনার স্ত্রী অসুস্থ, ছেলে রিক্সা চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি বাবা-মাকে তিন বেলা খেতে দেয়, এটাই অনেক কিছু। ওষুধ কেনার টাকা কে দেবে? তাই উনি গাছের পেয়ারা, ক্ষেতের পুইশাক, চালের সিম এগুলো বিক্রি করে উনার স্ত্রীর ওষুধের টাকা জোগার করেন।
উনার স্ত্রীর রোগের কথা জানতে চাইলে বলেন পেটের কী যেন রোগ, ডাক্তার বলছে অপারেশন করালে এইরোগ ভালো হবে এবং চলাফেরা করতে পারবে। অপারেশন করাতে লাগবে এগারো হাজার টাকা।
আমি বৃদ্ধকে বললাম:- পেয়ারা দশটার দাম কত?
বৃদ্ধ:- পঞ্চাশ টেকা, পাঁচ টেকা পিস।
:- আমি আপনাকে দশটা পেয়ারার দাম এগারো হাজার টাকা দেব। আপনি আপনার বউয়ের অপারেশন করাবেন এ টাকা দিয়ে।
বৃদ্ধ টাকাগুলো দুহাতে মুঠো করে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বৃদ্ধের চোখে পানি, ডাঁট ভাঙা মোটা চশমার কারনে চোখের পানি দেখা যাচ্ছেনা। আমি পেয়ারাগুলো একটা ব্যাগ এ তুলে গাড়িতে চলে আসি।
সাবাদের বাড়ি পৌছা পর্যন্ত গাড়িতে সারাটা পথ রুবীআপা আমাকে বকা দিতে দিতে আসলেন মিষ্টি না নিয়ে পেয়ারা কেনার অপরাধে।
রুবীদের বাসায় ঢুকা মাত্র সবাই যেন আমাদেরকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকালেন। আমিতো রীতিমত লজ্জা পাচ্ছি। সাবা এসে আমার হাত থেকে পেয়ারার ব্যাগটা ভেতরের রুমে রেখে এসে আমাকে ও রুবী আপাকে ওর বেডরুমে নিয়ে গিয়ে সব খুলে বলে।
সাবা'র দাদি নব্বইয়োর্ধ বৃদ্ধ মহিলা গত একসপ্তাহ যাবত মৃত্যুশয্যায়। এই যায় সেই যায় অবস্থা। গতকাল থেকে উনি অবুঝ বালিকার মতো বায়না ধরছেন পেয়ারা খাবেন। সবাই মিলে পুরো শহর জুড়ে পেয়ারা খুঁজে পাচ্ছেনা। আজ সকালে তার ছোট চাচাকে শ্রীমঙ্গল পাঠানো হয়েছে পেয়ারা আনার জন্য। আর এর মধ্যে ওর দাদির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। বৃদ্ধাকে পেয়ারা না দেখিয়ে দিতে পারলে কেউই শান্তি পেতনা। বৃদ্ধার অন্তিম মুহুর্তে আমার হাতে পেয়ারা দেখে সবার বিশ্বাস আমি ফেরেস্তা আর আমাকে খোদ আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন পেয়ারা সাথে করে দিয়ে।
দাদিকে পেয়ারা খাওয়ানো হলো, আমাদেরকে যথাসম্মানে আপ্যায়ন পূর্বক দাওয়াতও গ্রহণ করা হলো। বিদায়ের সময় আমার মুখ ভোঁতা দেখে সাবা নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করলো, "মন খারাপ কেন তোমার?"
হতাশ ও দ্বিধাগ্রস্ত চোখে সাবা'র দিকে তাকিয়ে ওর কাছে জানতে চাইলাম, "ফেরেশতার সাথে উনারা মেয়ে বিয়ে দেবে তো?"
সাবা হাসছে, গুলুগুলু গালদুটো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। বড় সুন্দর লাগছে আজ সাবাকে।
ধন্যবাদ...... ✌✌✌
written by me.....
↓↓↓
প্রথমবার যাচ্ছি গার্লফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে।
সাবা'কে আমার গার্লফ্রেন্ড বলা যাবে কিনা জানিনা। ফেসবুকে আমাদের পরিচয়, মেসেঞ্জারে ভাবের আদান প্রদান। ফোন কল এ নিয়মিত খোঁজখবর ও ভিডিও কল এ শাসানো পর্যন্ত আমাদের সম্পর্ক। অনলাইন, ভার্চুয়াল বা বেতার এর দোহায় দিয়ে অনেকেই আমাদের সম্পর্কটাকে গুরুত্বের সাথে নেয়না। কিন্তু আমার বড়বোন (রুবী আপা) জানে আমার জীবনে সাবা'র গুরুত্ব কতটুকু।
বিগত তিনমাস যাবত আমার পরিবর্তনে বাসার সবাই অবাক। এখন আমি ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠি, আমার রুমে এখন আমার বন্ধুরা আসেনা, রাত ব্যাপি পার্টি হয়না, এলকোহলের গন্ধ বা নিকোটিনের ধোঁয়া পাওয়া যায়না।
বাসায় কারো সাথে উচ্চস্বরে কথা বলিনা, তিনবেলা'ই বাসায় খাই, খেয়ে আম্মুকে বলি 'তরকারিটা দারুণ রেঁধেছো আম্মু', আম্মু অবাক হয়ে চেয়ে থাকে আমার দিকে। একদিন তো খুশিতে আম্মু কেঁদেই ফেলেছিলো। আব্বুর সাথে যদিও এখনো কথা বলিনা তবে 'মিল' এ যাই ও বসে দেখাশোনা করি, আব্বু এতটুকুতেই খুশি।
সাবা'র কথা বাসায় শুধু রুবী আপা'ই জানতো, সাবার সাথে কথাও বলেছে রুবী আপা। এতদিন সব গোপন রাখলেও গতরাতে খাবার টেবিলে ভর মজলিশে সব ফাঁশ করে দেয় আপা। আব্বা শুনে উনার অভ্যেস অনুযায়ী রেগেমেগে একাকার,,, "চিনেনা-জানেনা-দেখেনি কখনো এমন মেয়ের সাথে প্রেম করে ডুবে মরছে, গাধা কোথাকার!"
আব্বা সহ বাসার সবার ফায়সালা, আগামীকাল রুবী আপাকে সাথে নিয়ে মেয়ের বাসায় যেতে হবে ও মেয়েকে তার পরিবার সহ আমাদের বাসায় দাওয়াত করে আসতে হবে। বাদবাকি পরে দেখা যাবে।
আমি রুবী আপাকে নিয়ে রওনা হলাম।
সাবাদের শহরে এসে হঠাৎ মনে হলো 'খালি হাতে যাওয়া ঠিক হবেনা,কিছু নেয়া দরকার।' রুবী আপা বললো "মিঠাইয়ের শোরুমে ঢুক, পাঁচ-সাত প্রজাতের মিষ্টি নিয়ে নে। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইট করতে বলে আমি গাড়ি থেকে নামলাম মিষ্টি কেনার উদ্দেশ্যে।
চোখ পড়লো রাস্তার পাশে একটা ঝুড়িতে দশ বারো পিস পেয়ারা নিয়ে বসে থাকা এক বৃদ্ধের দিকে। অস্বাভাবিক শীর্ণকায় ও বিধ্বস্ত চেহারা। এ বয়সে ও এই শারীরিক অবস্থায় কোনোক্রমেই এমন একজন মানুষ রাস্তায় পেয়ারা নিয়ে বসার কথা না। আরেকটা কথা হলো এই অফ সিজনে উনি পেয়ারা পেলেন কই?
কাছে গিয়ে জানতে পারি পেয়ারা গুলো উনার স্ত্রীর হাতে লাগানো বার্মিজ চাড়া গাছের, বারোমাস পেয়ারা ধরে। উনার স্ত্রী অসুস্থ, ছেলে রিক্সা চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি বাবা-মাকে তিন বেলা খেতে দেয়, এটাই অনেক কিছু। ওষুধ কেনার টাকা কে দেবে? তাই উনি গাছের পেয়ারা, ক্ষেতের পুইশাক, চালের সিম এগুলো বিক্রি করে উনার স্ত্রীর ওষুধের টাকা জোগার করেন।
উনার স্ত্রীর রোগের কথা জানতে চাইলে বলেন পেটের কী যেন রোগ, ডাক্তার বলছে অপারেশন করালে এইরোগ ভালো হবে এবং চলাফেরা করতে পারবে। অপারেশন করাতে লাগবে এগারো হাজার টাকা।
আমি বৃদ্ধকে বললাম:- পেয়ারা দশটার দাম কত?
বৃদ্ধ:- পঞ্চাশ টেকা, পাঁচ টেকা পিস।
:- আমি আপনাকে দশটা পেয়ারার দাম এগারো হাজার টাকা দেব। আপনি আপনার বউয়ের অপারেশন করাবেন এ টাকা দিয়ে।
বৃদ্ধ টাকাগুলো দুহাতে মুঠো করে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বৃদ্ধের চোখে পানি, ডাঁট ভাঙা মোটা চশমার কারনে চোখের পানি দেখা যাচ্ছেনা। আমি পেয়ারাগুলো একটা ব্যাগ এ তুলে গাড়িতে চলে আসি।
সাবাদের বাড়ি পৌছা পর্যন্ত গাড়িতে সারাটা পথ রুবীআপা আমাকে বকা দিতে দিতে আসলেন মিষ্টি না নিয়ে পেয়ারা কেনার অপরাধে।
রুবীদের বাসায় ঢুকা মাত্র সবাই যেন আমাদেরকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকালেন। আমিতো রীতিমত লজ্জা পাচ্ছি। সাবা এসে আমার হাত থেকে পেয়ারার ব্যাগটা ভেতরের রুমে রেখে এসে আমাকে ও রুবী আপাকে ওর বেডরুমে নিয়ে গিয়ে সব খুলে বলে।
সাবা'র দাদি নব্বইয়োর্ধ বৃদ্ধ মহিলা গত একসপ্তাহ যাবত মৃত্যুশয্যায়। এই যায় সেই যায় অবস্থা। গতকাল থেকে উনি অবুঝ বালিকার মতো বায়না ধরছেন পেয়ারা খাবেন। সবাই মিলে পুরো শহর জুড়ে পেয়ারা খুঁজে পাচ্ছেনা। আজ সকালে তার ছোট চাচাকে শ্রীমঙ্গল পাঠানো হয়েছে পেয়ারা আনার জন্য। আর এর মধ্যে ওর দাদির অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। বৃদ্ধাকে পেয়ারা না দেখিয়ে দিতে পারলে কেউই শান্তি পেতনা। বৃদ্ধার অন্তিম মুহুর্তে আমার হাতে পেয়ারা দেখে সবার বিশ্বাস আমি ফেরেস্তা আর আমাকে খোদ আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেন পেয়ারা সাথে করে দিয়ে।
দাদিকে পেয়ারা খাওয়ানো হলো, আমাদেরকে যথাসম্মানে আপ্যায়ন পূর্বক দাওয়াতও গ্রহণ করা হলো। বিদায়ের সময় আমার মুখ ভোঁতা দেখে সাবা নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করলো, "মন খারাপ কেন তোমার?"
হতাশ ও দ্বিধাগ্রস্ত চোখে সাবা'র দিকে তাকিয়ে ওর কাছে জানতে চাইলাম, "ফেরেশতার সাথে উনারা মেয়ে বিয়ে দেবে তো?"
সাবা হাসছে, গুলুগুলু গালদুটো লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। বড় সুন্দর লাগছে আজ সাবাকে।
ধন্যবাদ...... ✌✌✌
No comments